ফেসবুক আপনার আমার সংবেদনশীল মনের যত্ন করেনি- এটাকে আমরা বাংলাদেশীরা ক্রাইম মনে করছি, আপনি?

oSocIVLGeASstQp-800x450-noPad.jpgফেসবুক আপনার আমার সংবেদনশীল মনের যত্ন করেনি অথচ এটা করাটা ফেসবুকের একটা অলিখিত বা অব্যক্ত অঙ্গীকার ছিল সংবেদনশীল মনের মানুষের প্রতি কেননা তাদের মননের উপর ভিত্তি করেই মূলত ফেসবুকের সৃষ্টি হয়েছিল। আজ আপনার আমার সংবেদনশীল মন ইতোমধ্যেই আহত; অস্লীলতা, বীভৎসতার বিভীষিকায় রক্তাক্ত, সমাজ-সংস্কৃতি-ধর্ম জাত মূল্যবোধ হারানোর উপক্রমে আক্রান্ত, অনাকঙ্খিতের ক্লেদে ক্লেদাক্ত । সেই অঙ্গিকার ভঙ্গ করা যদি  সভ্যতার পরিক্রমা পর্বে কখনো ক্রাইম হিসেবে বিবেচিত হয়  তাহলে প্রথম আমরা ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করবো, যদিও আরো হাজারটা বাস্তব কারণে হাজারো এমন কি লাখো মামলা ফেসবুকের বিরুদ্ধে করা যায়  এবং ভবিষ্যতে কেউ না কেউ, কোন না কোন ফ্রন্ট সেটা করতে থাকবে। ইতোমধ্যেই বেলজিয়াম সরকার একটি মামলায় ফেসবুককে দিনে আড়াই লাখ ইউরো জরিমানা করেছে, কাজেই কাজটা শুরু হয়ে গেছে।


ফেসবুক, অনলাইন, ব্লগ -এগুলিকে আমরা মনে করতাম সভ্য, সংবেদনশীল মনের মানুষের জায়গা, কিন্তু ইতোমধ্যেই উগ্র, বদমাশ ও নষ্টরা এগুলো দখল করে ফেলেছে- এই বদ মানুষগুলি বাস্তবে যেমন অনলাইনেও তেমন, অনলাইন ওদের জায়গা নয়, তবুও তারা সেখানে উৎপাত করছে, অনলাইন, ব্লগ বা ফেসবুক ইত্যাদি সৃষ্টিই হয়েছে মূলত সংবেদনশীল মানুষের মননের উপর ভিত্তি করেই(পুনরাবৃত্তি করা হল) অথচ … আজ সারাবিশ্বে আমরা সেই সংবেদনশীল মানুষগুলিই ত্যক্ত-বিরক্ত-রক্তাক্ত-ক্লেদাক্ত ওই কীটগুলির স্ট্যাটাস, আপলোড, কমেন্টে …


আশা করছি আমাদের ভাষ্যটা এবং অভিপ্রায়টা কী সেটা উপরের তির্যক প্যারা থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন। হ্যাঁ, অনিয়ন্ত্রিত ফেসবুকের বিরুদ্ধে একটি সত্যিকারের সংবেদনশীল, পরিচ্ছন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বানানোই আমাদের অভিপ্রায় যেখানে আসলে আপনার সংবেদনশীল মন কখনই আহত হবেনা, অনাকঙ্খিতের ক্লেদে ক্লেদাক্ত হবেনা, পাবেন মেঘ ও ঘনঘটা মুক্ত রংধনু-উৎকীর্ণ, সত্যিকারের নির্মল নীল আকাশের অনুভব, একটা অনন্য ভালোলাগা-ভালোবাসার আবেশ । অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিচ্ছন্ন ফেসবুকের বিরুদ্ধে এটা আমাদের একটি প্রয়াস, প্রতিবাদ বা প্রতিশোধ ! ব্যস এটুকুই আমাদের ভুমিকা ।


দয়া করে নিচের প্যারাগুলিও একটু পড়ে নিন যেগুলি আমাদের প্রয়াসের উদেশ্য সম্পর্কে আপনাকে আরো যথার্থ ও পরিষ্কার ধারণা দিয়ে দেবে।


       ————————-


‘ ফেসবুকে হেট মেসেজের বিরুদ্ধে সুসানের( অস্ট্রেলীয় মুসলিম নারী) অভিনব রেভেঞ্জ ! প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ওইসব ম্যাসেজের বদলে ইউনিসেফের শিশু তহবিলে এক হাজার মার্কিন ডলার দান করতে চলেছেন সুসান। বিদ্বেষকারীদের জন্য এর চাইতে বড় প্রতিশোধ আর কি হতে পারে! ‘



‘ ফেসবুকের লাইক-কমেন্ট-শেয়ার-ভেরিফাইড কাউন্টিং এর ফাউল প্রপঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসুন, ৫০ লক্ষ লাইক নিয়েও বহু পেইজ ধুঁকে ধুঁকে মরছে , পুরো প্রপঞ্চটিই গোলমেলে-নিস্ফল-বিরক্তিকর, ওদের ইনসাইট(স্ট্যাটিক্টিস) আরো বাজে-অর্থহীন। এমনকি ওদের ভেরিফিকেশন পদ্ধতিও অর্থহীন, ৪৫০টি লাইক নিয়ে একেবারে সাধারণ একটি পেইজও ভেরিফাইড দেখা গেছে, আবার যথেষ্ট যথার্থ পেইজ ভেরিফাইড নাই কিংবা আবার ভেরিফাইড পেইজের হিড়িক পড়ে গেছে। লাইক-কমেন্ট-শেয়ার-ভেরিফাইড এর নামে একটি বাজে অর্থহীন-মরিচীকাময়-টাইমকিলিং গণনা- প্রতিযোগীতার প্রপঞ্চে সবাইকে ব্যস্ত রেখে ফেসবুক তার ব্যবসায়িক ও বৈষয়িক উদ্দেশ্য হাসিল করছে মাত্র। এই প্রপঞ্চটির পেছনে সময় নষ্ট করবেন না, এক্কেবারে বাদ দিন। ফেসবুক তার বিলিয়ন বিলিয়ন লাইক আর কমেন্ট নিয়ে জাহান্নামে যাক, আপনি শুধু বিশাল প্ল্যাট-ফর্মের মজাটা বা কার্যকারিতাটুকু নিন, সম্ভব হলে লাইক, কমেন্ট এমন কি স্ট্যাটাস দেওয়াও বন্ধ করে দিন, খুঁজতে থাকুন আরো ভাল বিকল্প প্ল্যাটফর্ম, পেয়েও যেতে পারেন নতুন একটি যা আপনাকে সত্যি সত্যি কেয়ার করে, আপনি ডিজার্ভ করেন, আপনাকে ডিজার্ভ করে, ফেসবুকের মত বল্গাহীন-নিরাপত্তাহীন-অর্থহীন-টাইমকিলিং-মরিচীকাময় নয় ! ‘



‘ ফেসবুকের শম্বুকগতির নতুন নতুন পরীক্ষানিরীক্ষা নিয়ে আমরা ত্যক্ত-বিরক্ত । আসলে এখন পর্যন্ত তাদের কোন পরীক্ষানিরীক্ষাই প্রমিত রুপ পায়নি, এই ধরুন ডিসলাইক বাটন নিয়ে, এখনো এটা আসছে-আসেনাই অবস্থায়, এইভাবে তাদের নতুন কোন বিষয়ই ব্যবহারকারীদের পুরুপুরি কাজে আসেনি। এখন নতুন নতুন ফিচার নিয়ে কাজ চলছে। দেখা যাক। তবে ইতোমধ্যেই যথেষ্টরও বেশী বিরক্ত হয়ে গেছি আমরা ! বস্তুত আমাদের কারো কোনকিছুই ফেসবুকে নিরাপদ নয়, ফেসবুক ব্যাপারটা নিয়ে ভাবেইনি, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা নামে একটা আইন আছে ফেসবুক সেটা নিয়েও ভাবেনি,  -এটা একটা রীতিমত আন্তর্জাতিক ক্রাইম -এর জন্য হয়ত একদিন ফেসবুককে ভোগতে হবে, সব ইউজার একযোগে বয়কটের হুমকি শুধু নয় মামলাও করতে পারে ! এতবড় একটি প্ল্যাটফর্ম কিভাবে এত ইন্ডিসিশনে ও ইন্সিকিউরিটিতে চলে আমাদের বুজে আসেনা, কিভাবে বছরের পর বছর কোন সেন্সরশিপ ও নীতিমালার তোয়াক্কা না করে এতবড় একটি উন্মুক্ত পাবলিক প্ল্যাটফর্ম বা (বিকল্প) গণমাধ্যম তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে  পারল (বিশেষকরে আমেরিকার মত দেশে এই স্টার্টআপ কিভাবে বছরের পর বছর চলতে পারলো যেখানে পান থেকে চুন খসলেই মামলা করার অপশন বিদ্যমান) সেটাও আমাদের বোধগম্য নয়।  ‘


‘ ফেসবুকে স্রেফ কিছু প্রতারক দিন-রাত মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টায় থাকে, পরিহাস হলো এরা সবাই ইউরোপ-আমেরিকার বাস্টার্ড আর এদের টার্গেট হলো মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ভারতীয় উপমহাদেশ ।
ফেসবুক আমাদের মন-মনন-ধর্ম-নৈতিকতা ও সংবেদনশীলতার জায়গাটিতে ইতিমধ্যেই যে ক্ষতি করে ফেলেছে তা পুনরুদ্ধার করা কঠিন, তদুপরি উপরে বর্ণিত বাস্টার্ডদের দৌরাত্ম তো আছেই। দেখার যেন কেউ নেই ফেসবুকে ! বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইনকাম করছে যাদেরকে নিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ফেসবুকের কোন মাথা-ব্যথাই নাই, এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন উদ্যোগই চোখে পড়েনি। ‘  ‘শেইম টু শেলফিস ফেসবুক! ‘


‘ ফেসবুক আমাদের সীমাহীন আশা-ভালবাসার জায়গা ছিল এবং জাকার্বার্গের চ্যারিটিতে শেয়ার দান করার সাম্প্রতিক ঘোষণাকে এপ্রিসিয়েট করি, তা সত্ত্বেও সরি টু সে, ‘ গুড বাই ফেসবুক ‘ ‘


' আমি ফেসবুক ব্যবহার করিনা, ফেসবুকের উপর নজরদারি করি এবং ফেসবুককে অব্জারভেশনে রাখি ! বিকল্প তৈরি হলেই ব্যবহার বা নজরদারি বা অব্জারভেশন সব মুহুর্তেই বাদ দিয়ে দেব। স্বীকার করি, ফেসবুক আমার জীবনের অনেক বড় বড় আবেগের সাথে জড়িয়ে গেছে, সেজন্য আমি ফেসবুককে ধন্যবাদও দিই, পছন্দ করি সেটাতো বলাবাহুল্য, কিন্তু তারপরও আমি চাই ফেসবুক না থাকুক এবং এই চাওয়াটা বর্তমান বিশ্বের সব সংবেদনশীল মানুষেরও যদি তারা ফেসবুকের রঙময়তায় ও ন্যাচারাল আবেদনময়তায় বুঁদ থাকে বলে সেই চাওয়াটা সবসময় বুঝতে পারেনা কিন্তু মাঝে মাঝে ঠিকই বুঝতে পারে। '


‘ বাংলাদেশ পেরেছে, বাংলাদেশ পারেনি ! চায়না কিন্তু পেরেছে ।
‘গ্রেট ওয়াল অব চায়না’র পর তারা তৈরি করেছে ‘গ্রেট ফায়ারওয়াল অব চায়না’
সেন্সরশিপ ধরে রেখে স্থানীয় ওয়েবসাইটগুলোকে নিয়ে নিজের সীমানার মধ্যে যেন আলাদা একটা ডিজিটাল জগৎ তৈরি করে নিয়েছে দেশটির সরকার। চীনে পশ্চিমা সাইটগুলো আনব্লক করে দেওয়ার প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়ে চীনের ইন্টারনেট বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ওয়েই বলেন,‘এখানে আমাকে বাছাই করতেই হবে। চীনের মাটিতে এসে চীনকেই অপমান করে অর্থ উপার্জন করতে চায় এমন কাউকে স্বাগত জানাই না আমরা। এটা এমন একটা পরিবারের মতো যা বন্ধুসুলভ নয় এমন কাউকে অতিথি হিসেবে স্বাগত জানায় না।’ ‘


‘ এটা ফেসবুকের সাথে আলোচনা করার সময় নয়, মামলা করার সময় ! ফেসবুক বর্তনাম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভার্চুয়াল স্পাই যেটা যুগপৎ ব্যক্তি, রাষ্ট্র ও সমাজের বিরুদ্ধে কাজ করে চলেছে। ফেসবুকের সাথে আলোচনা করে কোন ফল হবে না, কারণ ফেসবুকের জেশ্চারই এমন যে তারা কখনই কোন  সরকারের কোন বিধিনিষেধ মেনে নিতে পারবেনা। অথবা মেনে নিলেও সেটা কখনই পুরোপুরি কার্যকর হবেনা। আসলে এই পর্যায়ে আলোচনা করার কিছু নাইও, বরং বর্তমানে প্রতিটি দেশের সরকারের উচিৎ ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করা – ফেসবুক কিভাবে কোন দায়িত্ব না নিয়ে, কোন নিয়ন্ত্রন বা সম্প্রচার নীতিমালা না মেনে এত বড় একটি উন্মুক্ত পাবলিক প্ল্যাটফর্ম বছরের পর বছর চালিয়ে গেল, ইতিমধ্যে একটি দেশের আদালত ফেসবুককে দিনে আড়াই লাখ ইউরো জরিমানা করেছে, সুতরাং কাজটা শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফিরিয়ে দেওয়ার বা ফেসবুকের ডেটা-সেন্টার থেকে মুছে দেওয়ার জন্য রিট দায়ের করতে পারে, ফেসবুকের ডেটা সেন্টারে ইতিমধ্যে শুধু বাংলাদেশ নয় প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রের গোপন তথ্য জমা হয়ে গেছে।   । ইতোমধ্যে সমাজ, দেশ-জাতি-ধর্মের, তদুপরি সংবেদনশীল মানুষের মননের যে ক্ষতি ফেসবুক করে ফেলেছে তা অনেকটা ইর-রিভার্সিবল। এখন নিজেদের স্বার্থেই প্রতিটি দেশের উচিৎ নিজস্ব সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরি করে ধীরে ধীরে ফেসবুককে ডেস্ট্রয় করে দেওয়া । ‘



*ফেসবুক, গুগল আমাদের বিশ্ব-সংবেদনশীলতার যে ক্ষতি করে ফেলেছে তা পুনরুদ্ধার কঠিনই হবে । তবে অসম্ভব নয়, তাই তো আমাদের সম্ভবের এই প্রয়াস । বিক্ষিপ্ত ও তির্যক প্যারাগুলি পড়ে সময় দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ আমাদের এই প্রয়াসের সাথে থাকার জন্য ।


https://www.facebook.com/MyCtgBangla/videos/1079470832196012/

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

‘জাহাজ ভাঙা শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে দিয়েছে ১২ কোটি টাকা’

The stars are back on the red carpet

Instant breakfast with quick hands