‘জাহাজ ভাঙা শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে দিয়েছে ১২ কোটি টাকা’
বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙা শিল্পের পরিবেশগত উন্নয়নের জন্য নরওয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ১২ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত মেরেতে লুন্ডেমু।
জাহাজ ভাঙা শিল্প বিকাশের ধারাবাহিক অগ্রগতি দেখতে সোমবার (৩০ মে) সীতাকুণ্ডের শীতলপুরে পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইয়ার্ড পরিদর্শনকালে এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি জানান, ভবিষ্যতেও এ শিল্পের উন্নয়নে তাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ শিপ ব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিএ) সহায়তায় আইএমও ও বাংলাদেশ সরকার কাজটি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি এ শিল্পের উন্নয়নে তার সরকারের সমর্থন প্রদান করে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রদূতকে পিএইচপি ইয়ার্ডে স্বাগত জানান পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈদেশিক বিষয়ক সম্পাদক মোহম্মদ জহিরুল ইসলাম রিংকু। রাষ্ট্রদূতের সাথে তার অ্যাম্বেসির অ্যাডভাইজার তারহি উইড্থ ও মোরশেদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এসময় ইয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক নূর মোহাম্মদ ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত প্রায় এক ঘণ্টা ইয়ার্ডের বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন। তারা ইয়ার্ডের ভেতর স্থাপিত বিভিন্ন অবকাঠামো বিশেষ করে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি পিএইচপি শিপইয়ার্ডকে একটি মডেল আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমার দেখা শিপ ইয়ার্ডগুলোর মধ্যে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে।’
তিনি এ ইয়ার্ডের মতো অন্য শিপইয়ার্ডগুলোকে সংস্কার করার আহ্বান জানান।
নরওরোজিয়ান রাষ্ট্রদূত লুন্ডেমু বলেন, ‘এ ইয়ার্ডের মতো করে যদি অন্য ইয়ার্ডগুলো গড়ে ওঠে, তাহলে এই শিল্পের ওপর নেতিবাচক যে মনোভাব উন্নত বিশ্বের রয়েছে, সে মনোভাবের পরিবর্তন ঘটবে।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের শিপইয়ার্ডগুলো নিয়ে এখন ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে যা আগামীতে এ দেশ সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাবে।
পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু বলেন, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো নিয়ে বহির্বিশ্বে যে মনোভাব রয়েছে, আমরা তা পরিবর্তন করতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। আগের চেয়ে ইয়ার্ডগুলোতে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের এখানে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এখানে আসছেন। তারা আমাদের ইয়ার্ডের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। তেমনি নরওয়ের রাষ্ট্রদূত আজ এ ইয়ার্ড পরিদর্শন করছেন।
আশির দশক থেকে বিকাশ হওয়া জাহাজ ভাঙা শিল্পের প্রসারে ইতিমধ্যে এগিয়ে এসেছে নরওয়ে সরকার। দূষণ কমানো এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতে নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তায় শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এভাবে সব ইয়ার্ডগুলো এগিয়ে গেলে হলে আশা করা যায় এ শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত হবে।
Comments
Post a Comment