৫০ আসন টার্গেটে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাপা



31831_x5দলের সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা কাটিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতির দিকে আগানোর চিন্তা করছে জাতীয় পার্টি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবগুলো আসনে প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও দলটি মূলত ৫০টি আসন টার্গেট করেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার কৌশল হিসেবে সরকার ও বিরোধী উভয় শিবিরেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ। দুইদিকে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেও দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে আগে দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার কাজে মনোনিবেশ করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি দলের এক সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেছেন, আগামীতে আমরা এককভাবে নির্বাচনে যাবো। আর কারো সঙ্গে জোট নয়। তবে কেউ চাইলে আমাদের সঙ্গে আসতে পারে। এ জন্য আগে পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই মানুষ আমাদের দিকে এগিয়ে আসবে। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির বাইরে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছে জাতীয় পার্টি। যদিও এক্ষেত্রে খুব একটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে, একপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দলের সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুকে। সম্প্রতি এরশাদ তাকে নিজের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগও দেন। যদিও এর আগে বাবলুর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মহাসচিবের পদ থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। নেতাকর্মীরা বলছেন, আগামী নির্বাচনে যেতে হলে বোঝাপড়ার জন্য জিয়াউদ্দিন বাবলুকে প্রয়োজন। এ জন্যই তাকে আবার কাছে টেনে নেয়া হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য দলের কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করার জন্য দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে দায়িত্ব দিয়েছেন এরশাদ। সে অনুযায়ী সম্প্রতি দলের তৃণমূল পর্যায়ে একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে কেন্দ্র থেকে। এতে বলা হয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে জেলা কমিটির সঙ্গে সভা করতে হবে। ১ মাসের মধ্যে উপজেলা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। বৈঠকের পর উপজেলা কমিটিকে পরবর্তী ১ মাসের মধ্যে ইউনিয়ন কমিটিসমূহ গঠন করার নির্দেশ দিতে হবে। এবং ইউনিয়ন কমিটি  গঠন করে ১ কপি কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠাতে হবে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, এসব দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এই সাংগঠনিক কমিটি বাতিল বলে গণ্য হবে। পরবর্তীতে দলের চেয়ারম্যানের সম্মতি নিয়ে অন্য কমিটিকে এই দায়িত্ব দেয়া হবে। এই কমিটি সকল জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, মহানগর কমিটি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি গঠন করার ক্ষেত্রে সাহায্য-সহযোগিতা ও পরামর্শ দেবেন। কোনো সাংগঠনিক জটিলতা দেখা দিলে উভয়পক্ষের মতামত নিয়ে কেন্দ্রের সম্মতি সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এছাড়া যেসব উপজেলায় এখনও কোনো শক্তিশালী কমিটি নেই,  সেখানে জরুরিভিত্তিতে নতুন কমিটি  গঠনের জন্য জেলা কমিটিকে পরামর্শ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়।
সূত্র বলছেন, এসব কাজ দেখভালের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে প্রতি জেলায় আলাদা আলাদা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। সূত্র বলছে, কমিটি গঠনের কাজ শেষ হলেই ৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজে হাত দেবেন এরশাদ। জাপা সূত্র বলছে, আগামী নির্বাচনেও বর্তমান সরকারের সঙ্গে থাকা নেতাদের ভূমিকাই মুখ্য থাকবে। এমপি মনোনয়ন থেকে শুরু করে নির্বাচনী সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন তারা।



Comments

Popular posts from this blog

‘জাহাজ ভাঙা শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে দিয়েছে ১২ কোটি টাকা’

লেবু ইলিশ রান্নার সহজ উপায়